বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:২০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বিএনপি সরকার গঠন করলে  প্রথম পর্যায়ে ৫০ লক্ষ পরিবার কে ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হবে— কয়ছর এম আহমেদ হাসিনার বিচার চেয়ে ট্রাইব্যুনালে মাওলানা সাঈদীর মামলার সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি ভোটাররা একটি সুস্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায় আছেন— কয়ছর আহমদ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন: কয়ছর এম আহমদ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে — কয়ছর এম আহমেদ শিগগিরই সরাসরি দেখা হবে: তারেক রহমান হারুন-বিপ্লবের সাত পদক বাতিল “রক্তের আখরে লেখা জুলাই বিজয় “ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও শহীদদের স্মরণে জগন্নাথপুর প্রেসক্লাবের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল জগন্নাথপুরে উপজেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন সংগঠনের জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত

বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্নের মুখে হাইকমান্ড

বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্নের মুখে হাইকমান্ড

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক::
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে হাইকমান্ড। দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে ছিলেন এমন অনেক নেতা দলীয় মনোনয়ন পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
বিশেষ করে সংস্কারপন্থীদের শেষ সময়ে দলে সক্রিয় করেই মনোনয়নের চিঠি দেয়ার বিষয়টি তারা সহজে মেনে নিতে পারছেন না। আবার অনেক আসনে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে সিনিয়র-জুনিয়র মানা হয়নি। অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীর আসনে একাধিক বিকল্প রাখা হয়েছে। আবার অনেক সাবেক এমপিকে দলীয় মনোনয়নের চিঠিই দেয়া হয়নি বলে বুধবার অভিযোগ করেন নেতাকর্মীরা।
সূত্র জানায়, নানা কারণে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল মিন্টুসহ এক ডজন সিনিয়র নেতা এবার নির্বাচন করছেন না। কয়েকজন মনোনয়নপত্রই তোলেননি।
এর মধ্যে রয়েছেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান, রুহুল কবির রিজভী। মনোনয়নপত্র তুলেও নির্বাচন করছেন না যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন নবী খান সোহেল। আবার সাবেক এমপিসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েক নেতাকে মনোনয়নই দেয়া হয়নি। নজরুল ইসলাম নির্বাচন না করলেও তাকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
নির্বাচন না করা প্রসঙ্গে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমার কখনই নির্বাচন করার শখ ছিল না। পরিবারের মধ্যে আমার বাবা-ভাই নির্বাচন করেছেন। অতীতে আমি কখনও নির্বাচনে অংশ নিইনি। এখন যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। দলের নেতাকর্মী-সমর্থকরা গ্রেফতার-মামলা ও হয়রানির মুখে পড়ছেন প্রতিনিয়ত।
সূত্র জানায়, পার্লামেন্টারি বোর্ড সম্ভাব্য প্রার্থীদের যে তালিকা করেছিল এর বাইরেও অনেককে বিকল্প হিসেবে চিঠি দেয়া হয়েছে। প্রতি আসনে একাধিক বিকল্প দেয়ার নামে গুলশান কার্যালয়ের একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গণহারে চিঠি দেয়ায় নির্বাচন নিয়ে দলের একটি অংশের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র জানায়, এদিকে প্রতি আসনে একাধিক বিকল্প থাকায় আসল প্রার্থীরাও রয়েছেন আতঙ্কে। লবিং-তদবির বা আর্থিক সুবিধার মাধ্যমে বিকল্প প্রার্থীকে আসল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে ছিলেন এমন অনেক নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। ওই সব আসনে কথিত সংস্কারপন্থীদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আবার অন্য দল থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়েই মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েছেন কয়েকজন। অথচ এসব আসনে যারা মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন তারা দীর্ঘদিন রাজপথে সক্রিয়ভাবে আন্দোলন করেছেন। তাদের প্রত্যেকের নামে অসংখ্য মামলা রয়েছে। কয়েকবার কারাবরণও করেছেন।
পটুয়াখালী-৩ আসনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসান মামুনের দলীয় মনোনয়ন মোটামুটি নিশ্চিত ছিল বলে জানান দলের একাধিক নেতা। তারা বলেন, মামুন দীর্ঘদিন ধরেই দলে সক্রিয়।ওয়ান-ইলেভেনের সময়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
কিন্তু হঠাৎ করেই সোমবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে হাজির হন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগদান করে বাগিয়ে নেন পটুয়াখালী-৩ আসনের মনোনয়নের চিঠি। রনির হঠাৎ করে দলে আসা এবং মনোনয়ন বাগিয়ে নেয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
রনির কারণে হাসান মামুনের কপাল পুড়তে যাচ্ছে বলেও তারা মনে করছেন। যদি শেষ পর্যন্ত তাই হয় তা হলে কেউ ঝুঁকি নিয়ে আর রাজনীতি করবে না বলে মনে করছেন তারা।
জানা গেছে, বিগত সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন এমন অনেক নেতাই মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন। সংস্কারপন্থীদের দলে ভিড়িয়ে মনোনয়ন দেয়াতেই তাদের কপাল পুড়েছে। এ নিয়েও নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
যারা বিগত সময়ে দলের সঙ্গে বেইমানি করেছেন, তাদের এনে এভাবে পুরস্কৃত করা কোনোভাবেই তারা মেনে নিতে পারছেন না। দলটির ত্যাগী নেতাকর্মীরা জানান, তারা যে অন্যায় করেছেন সর্বোচ্চ তাদের দলে ফিরিয়ে আনা যায়; কিন্তু তাদের মনোনয়ন দেয়া মেনে যায় না। তা হলে কেউ দলের দুর্দিনে কাজ করবেন না।
জানা গেছে, বরিশাল-১ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন দলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা রয়েছে। মামলার কারণে তিনি এলাকায় যেতে পারেননি। অথচ চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকায় তার নাম নেই। ওয়ান-ইলেভেনের সংস্কারপন্থী জহিরউদ্দিন স্বপনকে এ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তা এলাকার বেশিরভাগ নেতাকর্মী মেনে নিতে পারছেন না।
কুদ্দুসের মতো একই পরিণতি হয়েছে মাহবুবুল হক নান্নুর ক্ষেত্রেও। নান্নু ওয়ান-ইলেভেনে খালেদা জিয়ার পক্ষে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথের পরিচিত মুখ তিনি। মামলার পাশাপাশি কারাভোগও করেছেন কয়েকবার। বর্তমানেও তিনি কারাগারে। বরিশাল বিভাগের এ সহসাংগঠনিক সম্পাদক ঝালকাঠি-২ থেকে মনোনয়ন পাচ্ছেন, এটি মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন পাননি।
সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত ইশরাত জাহান ইলেন ভুট্টোকে কয়েক দিন আগে দলে সক্রিয় করেই মনোনয়নের চিঠি ধরিয়ে দেয়া হয়। বিষয়টি স্থানীয় নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারছেন না। এভাবে যারা দীর্ঘদিন মামলা-হামলা ও নির্যাতন সহ্য করে রাজপথে সক্রিয় ছিলেন, এমন অনেক নেতার কপাল পুড়েছে। সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত ১৩ নেতাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে নান্নুর স্ত্রী যুগান্তরকে বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজনীতি করলেও দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। দলের জন্য পরিবার সব কিছু ছেড়ে দিয়েছেন। অনেক কষ্ট করে আমি দিন কাটাচ্ছি। তারপরও আশা ছিল উনি মনোনয়ন পাবেন। কিন্তু তাকে মনোনয়ন না দিয়ে ১২ বছর দলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, এমন এক নেতা যে সংস্কারপন্থী তাকে ডেকে এনে মনোনয়ন দেয়া হল।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com